দীর্ঘবছর ধরে বন্ধ সরকারী সমবায় সমিতি , টাকা জমা রেখে বিপাকে গ্ৰাহকরা

27th June 2021 9:36 am বর্ধমান
দীর্ঘবছর ধরে বন্ধ সরকারী সমবায় সমিতি , টাকা জমা রেখে বিপাকে গ্ৰাহকরা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( কালনা ) : দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে মন্তেশ্বরের আসানপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিটি।আর এই কারণে বন্ধ হয়ে রয়েছে সমস্ত রকমের লেনদেন।তাই বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকেও বন্চিত হচ্ছেন এলাকার চাষী থেকে সাধারণ মানুষজন।রেখে দেওয়া জমানো টাকাও গ্রাহক না পাওয়ায় কারণে ক্ষোভ তৈরী হয়েছে ওই এলাকায়।সমিতির দায়িত্বে থাকা কর্মীদের দাবি উর্ধতন কতৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
                            মন্তেশ্বরের আসানপুর গ্রামে থাকা ওই সমবায় সমিতি থেকে চাষীরা চাষের সময় ধানের বীজ থেকে রাসায়নিক সার কিনতেন।এছাড়াও সময়ে-অসময়ে তাঁরা ওই সমবায় থেকে লোনও নিতেন।তেমনই আবার নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকাও জমা রাখতেন।দীর্ঘদিন ধরে সমবায়টি বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন সকলেই।এখানকার বেশীরভাগ গ্রাহকের মধ্যেই রয়েছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও চাষী সম্প্রদায়ের মানুষজন।কাজকর্ম সব ঠিকঠাক চললেও বছর পাঁচেক আগে ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার অমিয় কুমার দাঁ আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার পর থেকেই ওই সমবায় সমিতিটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত রকমের লেনদেন ও সুযোগ-সুবিধাও।গ্রাহক ঝর্ণা মাঝি বলেন,‘আমার ৬০ হাজার টাকা ওই সমবায় থেকে এখনও পাইনি।বয়স হয়েছে।শরীর অসুস্থ।টাকা থেকেও ওষুধ কেনার মতো টাকা হাতে না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়।’এমনই দাবি সাহাপুর গ্রামের নবকুমার দাস,টিয়া মাঝি,সাবিত্রী দাস নামের গ্রাহকদেরও।মন্তেশ্বর পন্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ শিশির ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে ওই সমবায়ের সম্পাদক পদে ছিলেন।তিনি জানান,গরীব মানুষের লক্ষ-লক্ষ টাকা ওই সমবায়ে রয়েছে।সেই টাকা না পাওয়ায় অনেকে যেমন চিকিৎসা করতে পারছেন না,তেমনই মেয়ের বিয়েও দিতে পারছেন না।স্বাভাবিক কারণেই চরম সমস্যায় পড়েছেন তারা।শুধু তাই নয় ওই সমবায় থেকে অনেক গ্রাহক আবার লোনও নিয়েছেন।সেই টাকাও সমবায় পাবে।ম্যানেজার অমিয় কুমার দাঁ মারা যাওয়ার পর থেকেই সমবায়টি বন্ধ হয়ে যায়।আর্থিক নয়ছয়েরও অভিযোগ ওঠে।বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষকে বারবার জানানোর পরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।তিনি বলেন,‘সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আধিকারিকরা আসেন কয়েক বছর আগে।এআরসিএসের কাছে সমস্ত হিসাবপত্র দিলে তিনি অডিট অফিসারের কাছে যেতে বলেন।তাও করেছি।তারপরেও অডিট হয়নি।সি আই,বিডিওকে জানিয়েছি।এই বিষয়ে হেলদোল নেই কারও।’ বর্তমানে সমবায় সমিতির বিল্ডিংটিও ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে।ভিতরে থাকা ছাদের চাঙর যেমন খসে পড়ছে তেমনই গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রতেও ছাঁদ চুঁইয়ে জল পড়ার কারণে তা নষ্ট হতে বসেছে বলে জানান বর্তমানে ওই সমবায়ের দায়িত্বে থাকা সমীর কুমার মন্ডল।তিনি বলেন,‘উর্ধতন কতৃপক্ষকে অডিট করে সমবায়টি চালু করার জন্য বারবার জানালেও তারা এই বিষয়ে কোনো কানই দিচ্ছেন না।সমবায়টির আধুনিকীকরণ করতে সরকারি অনুদান হিসাবে ৯ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকলেও তা কার্যকরী করা যাচ্ছে না।’এআরসিএস বিমলকৃষ্ণ মজুমদার বলেন,‘অডিট নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে।ওনাদের সঙ্গে নিয়ে সমস্যাটির শীঘ্রই সমাধান করা হবে।’





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।